পাবনায় প্রভাবশালীদের অবৈধ বালু উত্তোলন : তীব্র ভাঙনে ফসলি জমি !
1 min readপাবনা প্রতিনিধি : দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন প্রভাবশালী মহল। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পাবনা ও কুষ্টিয়ার প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে নদীর তীরবর্তী ফসলী জমি তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে। কৃষকদের শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। নিঃস্ব হচ্ছে কৃষকেরা। প্রশাসন নির্বিকার।
সরেজমিন দেখা যায়, পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের চর কণ্ঠগজরা এলাকায় বালু উত্তোলনের দৃশ্য দেখলে মনে হবে এটি কোনো নৌবন্দর। কিন্তু সেখানে প্রকাশ্যে ১৫ থেকে ২০টি ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। শতাধিক ট্রলার মাধ্যমে এসব বালু চলে যাচ্ছে পাবনার ভাড়ারা, দোগাছী, পাকশী, সুজানগর, কুষ্টিয়ার পাংশা, কুমারখালী ও রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন অন্তত কোটি টাকার ওপর বালু উত্তোলন করা হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষকরা বলেন, ‘নৌকার ওপর অস্ত্র নিয়ে তারা বালু উত্তোলন করছেন। বছরের পর বছর ধরে এই কাজ চলছে। আমরা ধারণ করেছিলাম সরকার পতনের পর বালু উত্তোলন বন্ধ হবে কিন্তু প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ দেখি না। আর আমরা প্রতিবাদ করলেই আমাদের দেয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি। আপনাদের চোখেই দেখুন কিভাবে শত শত ফসলি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কেউ নেই।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জে সহযোগী আব্দুল আলিম এবং পাবনার ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খানসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রিত প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে এই বালু উত্তোলনের মহাকর্মযজ্ঞ চলছে। এছাড়াও নৌ-পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহল গুলোকে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন চলছে। গত বুধবার বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করায় তিন কৃষক পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে আর কেউ কথা বলতে সাহস করছেন না।
মন্তব্য নিতে আব্দুল আলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পাবনার ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান বলেন, ‘গত এক মাস ধরে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কিন্তু এসবের সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা।’
এবিষয়ে চেষ্টা করেও পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা বলে মন্তব্য করে পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা যখন অভিযানে যায় তখন তারা পালিয়ে যায়। আমাদের জনবলও কম। তারপরও আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আবারও অভিযান চালাবো।’