টিসিবির কার্ড নিয়ে ঈশ্বরদীতে বিএনপি -জামায়াতের সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ
1 min readপাবনা প্রতিনিধি ঃ পাবনার ঈশ্বরদীতে টিসিবির কার্ড বণ্টন করা নিয়ে বাক-বিতণ্ডার জের ধরে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপির ৩ কর্মীসহ অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদে এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, মিলন বিশ্বাস, রাজিব মোল্লা ও রাব্বি মোল্লা। তাদের মধ্যে রাজিব ও রাব্বি লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও লক্ষীকুন্ডার বিরু মোল্লার ছেলে। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের যৌথ মতামতের ভিত্তিতে লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির ১০০ জন ও জামায়াতের জন্য ৫০ জনকে টিসিবির কার্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার বিকেলে জামায়াতের স্থানীয় নেতা আকরাম হোসেনসহ কয়েকজন তাদের লোকজনের নামে টিসিবির কার্ড বরাদ্দ ঠিকঠাক আছে কিনা দেখতে ইউপি পরিষদে আসেন। এ নিয়ে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক বিরু মোল্লার সঙ্গে তারা কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিরু মোল্লা জামায়াত নেতা আকরামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুমিতো আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে, জামায়াতের নেতা হলে কবে?’
এসময় ইউপি সচিবের কক্ষেই তাদের দু’জনের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। পরে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রঞ্জু বিশ্বাস ও ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিজানুর রহমান খোকনের মধ্যস্থতায় দু’জনের ঝগড়া মীমাংসাও করা হয়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরে বিএনপির লোকজন দলবদ্ধ হয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা আকরাম হোসেনের বাড়ির দিকে বিক্ষুব্ধ হয়ে যাওয়ার সময় জামায়াতের লোকজন তাদের প্রতিহত করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে সেখানে গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে। পরে খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিজানুর রহমান খোকন জানান, ‘১০-/১২টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে একদল যুবক ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এসে গুলিবর্ষণ করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গুলি বর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারা একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাহাবুল হক বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনার সময় সাবেক ছাত্রদল নেতা তানভির হাসান সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা সেখানে হাজির হলেও কিছুক্ষণ ঘটনাস্থলে থেকে তারা চলে যান।
ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক বিরু মোল্লা বলেন, ‘আকরাম হোসেন কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগ করতেন। এখন জামায়াতে যোগ দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছেন।’
অভিযোগ অস্বীকার করে জামায়াত নেতা আকরাম হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষের জন্য বিরু মোল্লার লোকজন দায়ী। তারাই প্রথমে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালাতে যায়।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘টিসিবির কার্ড নিয়ে তাদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।